সিরাজ-রুমিনকেই বেছে নিল বিএনপি

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বগুড়া-৬ (পৌরসভা-সদর উপজেলা) আসনের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হচ্ছেন বগুড়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য জি এম সিরাজ। এ ছাড়া সংরক্ষিত নারী আসনে বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা সংসদে যাচ্ছেন। বিএনপির নীতিনির্ধারণী সাংবাদিককে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। দলীয় সূত্র জানায়, বিএনপির দুর্গখ্যাত এ আসনে মনোনয়ন পেতে অনেকে দৌড়ঝাঁপ করেছেন।

কেন্দ্রীয় না স্থানীয়-কোন পর্যায়ের নেতাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, তা নিয়ে দলে নানা আলোচনা হয়েছে। কারণ পরিবর্তিত রাজনৈতিক বাস্তবতায় এ আসনে জয় ধরে রাখা বিএনপির জন্য প্রেস্টিজ ইস্যু। ফলে শেষ পর্যন্ত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সিদ্ধান্তে জি এম সিরাজকে বেছে নেওয়া হয়েছে। ব্যাংককে অবস্থানরত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলে বগুড়া-৬ এবং সংরক্ষিত নারী আসনের প্রার্থী চূড়ান্ত করেছেন। সোমবার ফখরুলের দেশে ফেরার কথা রয়েছে। তিনি দেশে ফিরেই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে পারেন।

জানা গেছে, আগে থেকেই বগুড়া-৬ আসনের জন্য দলটির সাবেক সংসদ সদস্য জি এম সিরাজ বিএনপি হাইকমান্ড তথা তারেক রহমানের ‘গুডবুকে’ ছিলেন। তার প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে বগুড়ায় আগে থেকেই গুঞ্জন ছিল। এর আগে সিরাজ বগুড়া-৫ আসনে এমপি ছিলেন।

প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে জি এম সিরাজ সম্প্রতি সাংবাদিকদের বলেন, বগুড়া-৬ জিয়া পরিবারের আসন। এই আসনে ধানের শীষের প্রার্থীকে হবেন, সেটা খালেদা জিয়া আর তারেক রহমান ছাড়া কেউ জানেন না। তবে আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হলে না করব না।

দলীয় সূত্র জানায়, সিরাজকে বেছে নেওয়ার কারণ হিসেবে তার এ ক্ষেত্রে তারেক ঘনিষ্ঠতা অন্যতম কারণ মনে করা হচ্ছে। তা ছাড়া ‘হাওয়া ভবন’ ঘনিষ্ঠ বলেও সিরাজের পরিচিতি রয়েছে। তা ছাড়া তিনি খোদ চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অত্যন্ত আস্থাভাজন ও ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। বগুড়া জেলা বিএনপিতে তার পৃথক প্রভাব রয়েছে। এসব কারণে দুঃসময়ে দলের সবচেয়ে নিরাপদ দুর্গে সিরাজের ওপরই আস্থা রেখেছেন তারেক।

জানা গেছে, এ আসনের জন্য বিএনপি বেশ কিছু বিকল্প ভেবেছিল। দলটি এমন কাউকে দলের টিকিট দিতে চেয়েছিল যিনি জয়ী হয়ে আসতে পারবেন। আবার সংসদে জোরালো ভূমিকাও রাখতে পারেন। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রে জানা যায়, এখানে দলটির প্রার্থী হতে মান্নাকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। মান্না যদি বিএনপিতে যোগ দেন, তা হলেই তাকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে বলে জানানো হয়েছিল মান্নাকে। কিন্তু মান্না গণমাধ্যমকে জানান, বিএনপির প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু দলত্যাগ করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। শেষ পর্যন্ত প্রচেষ্টাটি ভেস্তে যায়। এরপর দলের হাইকমান্ড স্থানীয় অনুগত ও বিশ্বস্ত প্রার্থীর খোঁজার দিকে নজর দেয়। সেখানে দলের রাডারে ধরা পড়েন সিরাজ।

ওই আসন থেকে একাদশ নির্বাচনে বিজয়ী মির্জা ফখরুল শপথ না নেওয়ায় আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। তফসিল অনুযায়ী, এ আসনে ভোটগ্রহণ হবে ২৪ জুন। তার আগে মনোনয়ন দাখিলের শেষ সময় ২৩ মে। মনোনয়নপত্র বাছাই ২৭ মে এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৩ জুন।

সংরক্ষিত আসনে রুমিন ফারহানাকেই বেছে নিল বিএনপি
এদিকে সংরক্ষিত আসনে বিএনপির মনোনয়ন জমা দানের তারিখ শেষ হচ্ছে আজ। সংসদে যেতে আগ্রহী অন্তত এক ডজন প্রার্থীকে পেছনে ফেলে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা সংসদে যাচ্ছেন। জানা গেছে, আগে থেকেই তার নাম তারেক রহমানের ‘গুডবুকে’ ছিল। দলের জন্য উচ্চকণ্ঠ রুমিন ফারহানা ইতোমধ্যে নিজের সাংগঠনিক দক্ষতার ছাপ রেখেছেন। তৃণমূলে এবং জাতীয় পর্যায়ে তার ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। দল মনে করছে সংসদে সরকারের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার ক্ষেত্রে রুমিনই এ মুহূর্তে সবচেয়ে যোগ্য মুখ।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর